বিশেষ সংবাদদাতা, কক্সবাজার।
কক্সবাজার পর্যটন শিল্পে গত ২ মাসে ক্ষতি ৫শ’ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির নেতৃবৃন্দ।পর্যটন শহর কক্সবাজার ওসমুদ্র সৈকত ২ মাস ধরে ফাঁকা। দেশে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের হার আশংকা জনক ভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় পর্যটন খাতে এর মারাত্মক ভাবে বিরূপ প্রভাব পড়ে। এদিকে কক্সবাজার জেলা ও পার্শ্ববর্তী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে করোনা সংক্রমণের প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় হঠাৎ মৃত্যু ঝুঁকি ও বাড়ছে, ফলে উখিয়া, টেকনাফ ও রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগামী ৩০ মে পর্যন্ত কড়াকড়ি লক ডাউনের ঘোষণা করেন সংশ্লিষ্ট প্রশাসন।তাই কক্সবাজার করোনার চরম ঝুঁকিতেরয়েছে। প্রতিদিন বাড়ছে সংক্রমণ ও মৃত্যু। চরম ঝুঁকিতে থাকা সত্বে ও পর্যটন খাত সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী অর্ধ লক্ষাধিক শ্রমিক কর্মচারী স্বাস্থ্য বিধি মেনে কক্সবাজার পর্যটন খাত খুলে দেয়ার দাবীতে মানব বন্ধন ও দফায় দফায় বীচ ম্যানেজম্যন্ট কমিটি ও জেলা প্রশাসনের সাথে একাধিক বৈঠক করেছেন। জানা গেছে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত সহ ১১টি পর্যটন স্পট বন্ধ রয়েছে গত ২ মাস ধরে। যেমন,সোনাদিয়া,মহেশখালীর আদিনাথ মন্দির, হিমছড়ি,দরিয়া নগর,ইনানী,টেকনাফ মার্টিন কূপ,সেন্টমার্টিন,পাটুয়ারটেক,রামুর বৌদ্ধ মন্দির, বঙ্গবন্ধু সাফারী পার্ক ইত্যাদি। এদিকে সাগর পাড়ের কিটকট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মাহবুবুর রহমান জানান, দেশের সব সেক্টর সীমিত পরিসরে খুলে দেয়া হয়েছে অথচ পর্যটন স্পট সমূহ পুরোপুরি বন্ধ রাখার যুক্তি যুক্ত কারণ খুঁজে পাচ্ছিনা আমরা।কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত সহ বিভিন্ন পর্যটন স্পটে প্রায়৩ হাজার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও কর্মচারী সম্পূর্ণ হয়ে পড়েছে। অনেকে গেল পবিত্র রমজানের ঈদের কোন ধরনের কেনা কাটা ও করতে পারেনি। বর্তমানে আমরা চরম মানবেতর জীবনযাপন করছি। হোটেল মোটেল গেষ্ট হাউস অফিসার্স ওনার্স এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কলিম উল্লাহ জানান, আমাদের ৩০হাজার কর্মকর্তা কর্মচারী বিনা নোটিশে চাকুরীচ্যূত হয়েছে। তারা সবাই এখন চরম দূর্দিন অতিক্রম করেছে। আমরা বার বার সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চেয়েছি অন্তত হোটেল মোটেল গেষ্ট হাউস মালিক যারা রয়েছেন তারা যাতে এই আপদ কালীল সময়ে চাকুরীচ্যূতদের অর্ধেক বেতন হলেও পরিশোধ করেন।শুধু তাই নয়,কোন ধরনের নীতিমালা ছাড়াই যখন তখন সাড়াই করেন মালিক পক্ষ।তাই খুলে দেয়া হলে পর্যটন খাত চাকরিচ্যূতরা পূণঃরায় ফিরে পেতে পারে হারানো চাকুরী। ট্যূর-অপারেটর এসোসিয়েশন (ট্যূয়াক)এর সভাপতি তোফায়েল আহমেদ জানিয়েছেন আমাদের অন্তত ২হাজার লোক বেকার অবস্থায় দিনাতিপাত করছেন ব্যবসা বাণিজ্য সম্পুর্ন বন্ধ। আর এ খাতে সারা দেশের প্রায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ৫০হাজার লোক।হোটেল মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুখিম খান এপ্রতিবেদককে জানিয়েছেন, গেল দু,মাসে আমাদের ৪৮০টি ছোট বড় সব হোটেল মোটেলের ৫ শতকোটি বটাকা ছাড়িয়ে গেছে। দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে আমাদের। তাই বাধ্য হয়ে কর্মকর্তা কর্মচারী সাড়াই করতে হয়েছে। সরকার সব সেক্টর যখনই সীমিত পরিসরে খুলে দিচ্ছে তখন পর্যটন খাত খুলে দিতে অসুবিধা কোথায়।তাই পর্যটন স্পট সমূহ খুলে দেয়া হলে দৈনিক বিপুল অংকের লোকসান থেকে বাঁচা যেত।গেষ্ট হাউস রেষ্ট হাউস মালিক সমিতির সভাপতি ওমর সুলতান, বলেন,আমাদের ২৭০টি গেষ্ট হাউসে মাসিক ক্ষতির পরিমাণ ৭কোটি ৮০লাখ টাকা।এভাবে লোকসান
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মামুনুর রশীদ জানিয়েছেন, সারা দেশের চাইতে কক্সবাজারের পরিবেশ পরিস্থিতি এক নয়।কারণ, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল ছাড়া ও বিদেশি পর্যটকরা সারা বছর কক্সবাজারে আগমন করে। তা ছাড়া ১১লক্ষ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী উখিয়া -টেকনাফের মাত্র ৬হাজার একর বনভূমিতে গাদাগাদি করে অবস্থান করছে। তাদের খাদ্য চাহিদা সহ অন্যান্য নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করতে এবং নিরাপত্তা বিধানে প্রতিদিন প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক লোক রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সতর্কতার সাথে যাতায়াত করতে হচ্ছে।এর মধ্যে সরকারি বেসরকারি সংস্থার অনেক লোকজন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। কয়েক জন মৃত্যু বরন ও করেছেন। অন্য দিকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমাগত ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে।এর মধ্যে ১৫ রোহিঙ্গা করোনায় মৃত্যু বরন করেছে। এ পরিস্থিতিতে পর্যটন স্পট সমূহ খুলে দেয়া হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে যেতে পারে বলে মনে করেন ডিসি। কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স এর সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী খোকা জানান,কক্সবাজারের পর্যটন শিল্প বিশেষ করে হোটেল মোটেল গেষ্ট হাউস রেষ্টুরেন্ট ও অন্যান্য ব্যবসা প্রতিষ্টান সমূহের গত দু,মাসে ক্ষতির পরিমাণ ৫ শ’ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে। কক্সবাজার ব্যবসায়িকদের এ ক্ষতি দীর্ঘদিন ধরে ভোগতে হবে বলে মনে করেন এ ব্যবসায়িক এ নেতা। কক্সবাজার রেস্টুরেন্টে মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার বলেন, কক্সবাজার শহর ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় ৩৭৮ টি হোটেল রেস্তোরাঁ রয়েছে। এ সব রেস্তোরায় কর্মচারীর সংখ্যা প্রায়২০ হাজার।এরা সবাইকে মালিক পক্ষ চাকুরী থেকে অব্যাহতি দিতে বাধ্য হয়েছেন। কারণ রেস্তোরাঁ মালিকরা দোকান বন্ধ রেখে কর্মচারীদের বেতন দেয়ার অবস্থা করো নেই।পর্যটন ব্যবসার সবকিছু বন্ধ থাকলে ও বিদ্যৎ বিল,মাসের ভাড়া,আনুসাংগিক যন্ত্রপাতি সচল রাখতে কিছু কিছু কর্মকর্তা কর্মচারীদের বসে বসে বেতন দেয়া সহ ইত্যাদি কারণে কক্সবাজার পর্যটন শিল্পের চরম দূ্র্দিন চলছে বলে মনে করেন এ শিল্পের উদ্যেগতারা।
######